ময়মনসিংহ প্রতিনিধি।। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার সানাদিয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের মামলা, হামলায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে একটি পরিবার। ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নেয়ায় নিজ ভিটেতে ফিরতে পারছে না তারা। দীর্ঘদিন ধরে পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্কুলগামী কোমলমতি শিশুরা। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা হলেও কোন সমাধান পাচ্ছে না ভুক্তভোগি পরিবার। এসব নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্য মোছাঃ নূরজাহান ওরফে কাইল্যামা(৫৮)।
লিখিত অভিযোগ, মামলার আরজি ও ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সদর উপজেলার সানাদিয়া গ্রামের মো. আব্দুল হেলিমদের সাথে একই এলাকার মো. ফজল হকদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এসব নিয়ে গত ৫ মার্চ ফজলুল হক বাদী হয়ে হেলিমের স্ত্রী ও চারপুত্রসহ পরিবারের লোকজনের নামে কোতোয়ালী থানায় একটি মারামারি সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেন(মামলা নং-১৮)। এরপর গত ১৭ এপ্রিল ২০২১ তারিখে ফজলুল হকের নেতৃত্বে আবুল কালাম,অসিম উদ্দিন, আব্দুল মতিন, সাইফুল, গনি, শহিদুল মুন্সি, জাহাঙ্গীর আলম বাবু, নাইম, কাওসার, রেজাউলসহ একটি সংবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আব্দুল হেলিমের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় হেলিমের পরিবারের লোকজনকে রক্তাক্ত জখম করে এবং বাড়ি ঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করে। এঘটনায় আব্দুল হেলিম বাদী হয়ে ২১ এপ্রিল কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৬৮। ফজলুল হক তার স্ত্রীকে অন্তঃসত্বা দেখিয়ে এবং পেটের সন্ত্রান নষ্ট করা হয়েছে উল্লেখ করে হেকিমের স্ত্রী-সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা করেন ডাক্তারী মেডিকেল রিপোর্টে গর্ভপাত মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এসব মামলার ভয়ে হেকিমের বাড়ির পুরুষ মানুষ ঘর ছাড়া হয়ে থাকে। এই সুযোগে পরবর্তীতে ৫ মে ২০২১ তারিখে ফজলুল হক তার লোকজন নিয়ে এসে হেলিমের বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালায়। এসময় তারা হেলিমের ২৪ হাত লম্বা একটি টিনের ঘর, ছেলেদের ৪টি চৌচালা টিনের ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যায়। এসময় সন্ত্রাসী হামলাকারীরা হেলিম ও তার ছেলেদের বাড়িতে থাকা ধান-চাল, আসবাবপত্রসহ সকল জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। তারা পুকুরের মাছ, গাছ, ঝাড়ের বাঁশসহ কেটে নিয়ে যায়। পুরো ভিটেবাড়িটি বিরান ভূমিতে পরিনত করে দেয়। তাদের ভয়ে হেলিম ও তার সন্তানরা পরিবার পরিজন নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের কৃষি জমিগুলোও অনাবাদী পড়ে আছে।
এদিকে অন্তঃসত্বা নারীর সন্তান নষ্ট করা হয়েছে মর্মে যে অভিযোগ করা হয় মেডিকেল রিপোর্টে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। প্রকৃত পক্ষে ঐ নারী অন্তঃসত্বাই ছিলেন না।
আব্দুল হেলিমের স্ত্রী মোছাঃ নুরজাহান ওরফে কাইল্যামা জানান, প্রতিপক্ষ বাড়িঘর ভেঙ্গে নেওয়ায় এবং হামলা, মামলা ও হত্যার অব্যাহত হুমকির মুখে তারা এখন নিজের ভিটেতে ফিরতে পারছেন না। বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তার নাতী-নাতনিরা স্কুলে যেতে পারছে না। পরিবারের শিশুদের পড়ালেখা ব্যহত হচ্ছে। তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।