শেরপুর প্রতিনিধি।। শেরপুরের নালিতাবাড়ীর পৌর এলাকায় স্বামীর রেখে যাওয়া বাড়ী থেকে অঞ্জলী গাঙ্গুলি নামের ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে পাকা রাস্তায় ফেলে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে তারই পুত্রবধূ ও নাতি। শুক্রবার ১৪ জানুয়ারি বিকেলে পৌর শহরের উত্তর বাজারে এ ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, নালিতাবাড়ী পৌর এলাকার উত্তর বাজার মহল্লার অমল কান্তি গাঙ্গুলি গত বছরের ১৫ মে মারা যান। রেখে যান দুই ছেলে, এক কন্যা ও স্ত্রী রেখে ।এসময় তিনি মেইন রোড সংলগ্ন ৪শতাংশ জমি বাসাবাড়ী ও দোকানপার্টসহ রেখে যান।
কিন্তু অমল কান্তির মৃত্যুর পর দুই ছেলে জমি বন্টন করতে গেলে বড় ছেলে অসীম গাঙ্গুলি (৫৫) বাসার সবটুকু জমি তার নামে লেখা রয়েছে বলে দাবি করেন। ছোট ভাই অনুজ গাঙ্গুলি (৫২) বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের কাছে আবেদন করেন। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অন্যনান্যরা সামাজিক বিচারে ছোট ভাই অনুজ গাঙ্গুলি (৫২) ও বড় ভাই অসীম গাঙ্গুলির মাঝে হিন্দু রীতি অনুযায়ী সমানভাবে ভাগ করে বাসার সীমানা ইটের দেয়াল তুলে বাউন্ডারি করে দেওয়া হয়।
এছাড়া পিতার জীবদ্দশায় তার কাছ থেকে কৌশলে লিখে নেওয়া বাসার সবটুকু জমির অর্ধেক ছোট ভাইকে লিখে দেওয়ার জন্য বলে আসেন।
কিন্তু অসীম গাঙ্গুলি লিখে দিতে চাইলেও এখন লিখে দিতে গড়িমসি করছেন। তাই তাদের বৃদ্ধা মা অঞ্জলী গাঙ্গুলি বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত স্বামীর রেখে যাওয়া দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে বাসায় ঢুকলে তার বড় ছেলে অসীম গাঙ্গুলির স্ত্রী উমা গাঙ্গুলি তার কন্যা (বৃদ্ধার নাতি) ঐহী গাঙ্গুলি বৃদ্ধাকে ঘাড় ধরে বাসা থেকে বের করে দেয়। এসময় নাতি ঐহী ঘাড় ধরে সজোরে সামনে থাকা পাকা রাস্তায় তার দাদীকে ছুঁড়ে ফেলে। এতে ওই বৃদ্ধা রাস্তায় পড়ে গেলে তার মাথা ফেটে গুরুতর আহত হয়। এসময় স্থানীয়রা আহত বৃদ্ধাকে দ্রুত উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘচনাটির ভিডিও চিত্র সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। চারদিকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল বলেন, ঘটনা জানার পর পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ঘটনার পর থেকে নাতি ঐহী গাঙ্গুলি একটি বিল্ডিং এ দরজা বন্ধ করে বসে আছে। এ জন্য তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত আছে। তিনি আরো জানান, এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।