স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ বইবন্ধু পাঠাগার পরিদর্শন করে চমৎকৃত হয়েছি। ভিন্নধর্মী এ পাঠাগার পথের ধারে গাছ গাছালির শ্যামল ছায়ায় নীরবে-নিভৃতে জ্ঞানের আলো বিলিয়ে যাচ্ছে”। কথাগুলো সোমবার ১৪ই মার্চ বিকাল ৪টায় বইবন্ধু পাঠাগারে আলোচনা সভা ও সেরা পাঠকদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কবি, গল্পাকার, প্রাবন্ধিক ও ঔপন্যাসিক প্রফেসর ননী গোপাল সরকার বলছিলেন। নেত্রকোণা জেলা সদরের মৌগাতি ইউনিয়নের নগুয়া কুশলগাঁও গ্রামে ঘন সবুজ বনের কোলে ও ঢুপিখালী নদীর উপকূলে পাঠাগার প্রাঙ্গনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পাঠাগার প্রতিষ্ঠাতা কবি মোঃ রাসেল হাসানের সঞ্চালনায় ও ‘সাদা মানুষের ফাউন্ডেশন’ এর আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি গল্পাকার, প্রাবন্ধিক ও ঔপন্যাসিক প্রফেসর ননী গোপাল সরকার, বিশেষ অতিথি নেত্রকোণা পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক জনাব মারুফ হাসান খান অভ্র এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘বোধ’ সম্পাদক ভালোবাসার কবি তানভীর জাহান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভির কন্ঠশিল্পী আবুল বাশার তালুকদার, কবি দেবব্রত দাস ও কবি দুর্জয় শেখসহ অন্যান্যরা। তাঁরা বক্তব্যের মাধ্যমে বইবন্ধু পাঠাগারের পাঠক পাঠিকাসহ এলাকার সবাইকে মুগ্ধ করেন ও পাঠাগারে এসে বই পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। আলোচনা পর্ব শেষে সাদা মানুষের ফাউন্ডেশন পাঠাগারের সেরা তিন পাঠককে পুরস্কার, বইবন্ধু পাঠাগারে নগদ অর্থ ও পাঠাগারে কিছু বই প্রদান করেন। ভালোবাসার কবি তানভীর জাহান চৌধুরী বলেন, কবিরা দেশের প্রথম সারির বুদ্ধিজীবী, কবিরা ভীষণ দূরদর্শী। আর কবি নির্মলেন্দু গুণ হচ্ছেন বর্তমান বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। তিনি যে পাঠাগারে দৃষ্টি দিয়েছেন সে দৃষ্টি নন্দিত হবে। একদিন বইবন্ধু পাঠাগার হবে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মতো আর কবি রাসেল হাসান হবে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের মতো”।
তিনি আরো বলেন, “সরকারি-বেসরকারি এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সহযোগিতা করলে গ্রামীণ পাঠাগারটি অনন্য সৃষ্টি হয়ে থাকবে”। মারুফ হাসান অভ্র বলেন, “পাঠাগারটি দেখে আমি মুগ্ধ, আনন্দিত। আমি পাঠাগারটির পাশে থাকতে চাই, আলোর মানুষদের সাথে থাকতো চাই”।
বইবন্ধু পাঠাগার একটি অভিনব উন্মুক্ত পাঠাগার। একটি স্টেন্ডের উপর একটি বাক্স, বাক্সের ভিতরে বই। বাক্সটির একটি দরজা আছে। যে কেউ যেকোনো সময় খুলে পড়তে পারেন। কবি মোঃ রাসেল হাসান বলেন, আমাদের অনেকের দৃষ্টিভঙ্গিই নেতিবাচক। প্রথমে অনেকের কাছে পরামর্শ চাইলে তাঁরা নিরুৎসাহিত করে বলেছিলেন বই বিকালে রেখে আসবা, সকালে দেখবা সব উদাও। এখন তো অনেকদিন হলো। কই? চুরি হলো কই? সবাই পড়ে পড়ো রেখে যায়। ‘বইবন্ধু পাঠাগার’টির নামকরণ করেছেন স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি নির্মলেন্দু গুণ। তিনি তাঁর লেখা ৪৩টি বই ও পাঁচটি চেয়ারও উপহার দিয়েছেন।
বসন্তের মনোরম সন্ধ্যায় শিল্পী ও কবিদের গান পরিবেশন ও কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের যবনিকা ঘটে।