1. admin@dainikamaderphulpur.com : admin :
  2. chiran777@gmail.com : selim rana : selim rana
  3. info.popularhostbd@gmail.com : phulpur :
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেপথ্যে

Reporter Name

রাজীব সরকার,নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোণা ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর এক ডিলারের বিরুদ্ধে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এই অভিযোগ পত্র পেশ করা হয়। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে সাংবাদিকদের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য। চাল বিতরণের তালিকায় একই ক্রমিকে একাধিক ব্যক্তির নাম থাকা, রহস্যজনকভাবে তালিকায় দুই তৃতীয়াংশ নাম পরিবর্তন করা, দীর্ঘদিন ধরে তালিকায় নাম থাকলেও তা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির অজ্ঞাত থাকা, উপকারভোগীদের সই/স্বাক্ষর জাল করে অভিযোগ করার মত ঘটনাও ঘটেছে।

ইউনিয়নের সতরশ্রী বাজারে ডিলার কেরামত আলী তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চাল বিতরণ না করে তা কালোবাজারে বিক্রী করে দিচ্ছেন এমনটাই উল্লেখ করা হয় অভিযোগ পত্রে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, ডিলার কেরামত আলীর আওতায় মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ৪০৪ জন। এর মধ্যে গত ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মৃত, সচ্ছল ও অন্যান্য সুবিধাভোগী দেখিয়ে ২৬১ জনের নামের সংশোধনী তালিকা পাঠান ঠাকুরাকোণা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রাজ্জাক যা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে অনুমোদন দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার। কিন্তু সেই তালিকায় একই ক্রমিকে একাধিক নাম তালিকাভুক্ত হয়। এদিকে ডিলার এক ক্রমিকে একজনকে চাল দেয়ার ক্ষমতা রাখেন যার দরুন উপকার বঞ্চিত হন একই ক্রমিকে থাকা অন্য তালিকাভুক্তরা। এমতাবস্থায় ডিলারসহ ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সুধীজনদের দাবী- তালিকায় ভুল থাকায় উপকার বঞ্চিত হয়েছেন অনেকেই যার দরুণ এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী চালু হওয়ার পর থেকে তালিকাভুক্ত হওয়া অনেকেই জানতেনই না যে তাদের নামে চাল উত্তোলন করা হচ্ছে। নতুন ডিলার নিয়োগের পর বিষয়টি সকলের সামনে আসে এমনটাই জানান তালিকাভুক্ত অনেকেই। অভিযোগকারী হিসেবে যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে অনেকের সই/স্বাক্ষর জাল করে অভিযোগ পত্রে তা ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবী করেন ভুক্তভোগীরা।

অপরদিকে পুরাতন তালিকাভুক্ত কয়েকজনের সাথে কথা বললে তাদের মধ্যে ৫৭২ নং তালিকাভুক্ত সঞ্জিত মিয়া, ৫৭১ নং তালিকাভুক্ত উজ্জ্বল মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী চালু হওয়ার পর থেকে আমাদের নাম তালিকাভুক্ত করে চাল উত্তোলন করা হয়েছে যা আমরা জানতামই না। কেরামত আলী নতুন ডিলার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর আমরা তা জানতে পারি এবং গত তিন দফা চাল উত্তোলন করতে পেরেছি। এতদিন যারা আমাদের হক মেরে খেয়েছে আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। ৬২৮নং তালিকাভুক্ত নজরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ আমার নাম তালিকায় ছিল, চালও উত্তোলন করা হয়েছে কিন্তু আমি জানি না। যখন জানতে পারলাম তখন অনেকের কাছে দৌড়ালেও কোন কাজ হয়নি।

এদিকে নতুন তালিকায় উপকারভোগী ৫৭২নং কার্ডধারী খোকন চন্দ্র সূত্রধর ও ৫৮০ নং কার্ডধারী বিবি কুলসুম বলেন, আমাদেরকে না জানিয়ে অভিযোগ পত্রে আমাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে শুনে অবাক হয়েছি কেননা আমরা নিয়মিত চাল পাচ্ছি। তাই অভিযোগ করার প্রশ্নই আসে না। যদি কেউ আমাদের সই/স্বাক্ষর জাল করে থাকে তাহলে তাদের খুজে বের করে আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী রইলো প্রশাসনের কাছে।

৫৮৪নং কার্ডধারী লাইজু আক্তারের চাল নেয়া প্রণতী রাণী বলেন, আমি পুরাতন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। আমার স্বামী নেই। অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করি। কিন্তু আমার কার্ডটি হঠাৎ করে বাতিল করা হয়েছে। এমতাবস্থায় লাইজু আক্তার এলাকায় না থাকায় এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সুপারিশে আমাকে চাল দেয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত ডিলার মোঃ কেরামত আলী বলেন, আমি জানা স্বত্তে কোন অপরাধ করিনি। যথাযথভাবে চাল বিতরণ করার চেষ্ঠা করেছি। যারা তালিকা প্রণয়ন করেছেন তারা পূর্বের ডিলারকে ডিলারশিপ ফিরিয়ে দিয়ে তাদের অনৈতিক উদ্দেশ্য সফল করতে একই ক্রমিক একাধিকবার ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করিয়ে আমাকে বিপাকে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে। আমি সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী করছি।

ঠাকুরাকোণা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের কাছে জানতে চাইলে তিনি তালিকায় প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ব্যক্তির নাম পরিবর্তন করার কথা স্বীকার করলেও তালিকায় একই ক্রমিকে একাধিক নাম থাকার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানান। আরও বলেন যদি এরকম হয়েই থাকে তাহলে তা ইউপি সদস্যদের ভুলে হয়ে থাকতে পারে।

এব্যাপারে নেত্রকোণা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্যে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved
Design BY Raytahost