বাবুল সিকদার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সারকারখানার এ্যামোনিয়া প্লান্ট থেকে বিষাক্ত গ্যাসে কারখানার আশপাশ এলাকার শতাধিক একর ফসলী জমি নষ্ট হয়ে গেছে।এতে এই এলাকার অনেক কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে দাবি ভূক্তভোগীদের। এছাড়াও ক্ষতির আশংকা করছে আরো শতাধিক একর জমির মালিকরা।পাশাপাশি একটি পুকুর থেকে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার মাছ মরে গেছে। এই বিষয়ে ভূত্তভোগীরা আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রতিকার চেয়ে লিখিত ভাবে আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন ভূক্তভোগীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা যায়,উপজেলার চরচারতলা ইউনিয়ন এলাকায় আশুগঞ্জ সারকারখানার ইউরিয়া প্লান্টের এ্যামোনিয়া গ্যাসের অতিরিক্ত গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে শতাধিক একর বোরো জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও আগাম লাগানো অনেক ফসলী জমিতে চারা থেকে ধান বের হয়ে যাওয়া গাছও পুড়ে গেছে। এতে করে এই এলাকার শতাধিক কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই নির্গত গ্যাসের কারনে কারখানার আশপাশের বিভিন্ন পুকুরের মাছ গবাদিপশু মরে যাচ্ছে। যার কারনে পুকুরের মাছেরপোনা নিধন হয়ে প্রায় দুই লক্ষাধীক টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় গিয়ে জানা যায়, গত ১৫ মার্চ মঙ্গলবার রাতে কারখানারি এ্যামোনিয়া প্লান্ট থেকে নির্গত গ্যাসের কারনে এলাকার আশপাশের শিশু সহ লোকজনের স্বাশকষ্টও শুরু হয়।পরে বুধবার সকালে কৃষকরা জমিতে গিয়ে দেখতে পায় তাদের রোপন করা চারা এ্যামোনিয়া গ্যাসের কারনে পুড়ে লাল হয়ে গেছে। এতে অন্তত একশ একর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে দাবি কৃষকদের। ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি তাদের নষ্ট যাওয়া জমির ক্ষতিপূরনের দাবি করে।আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড ক্যামিকেল কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মোক্তার হোসেন জানান,কারখানা থেকে নির্গত এ্যামোনিয়া গ্যাসের কারনে আমার রোপন করা ১৫ কানি জমি পুড়ে লাল হয়ে গেছে। আমার পরিবার কিভাবে চলবে তা বুঝতে পারছি না। রহমত আলী নামে আরো একজন কৃষক জানায়,আগেরদিন জমিতে সবকিছু ভাল আছে দেখে বাড়িতে গিয়ে পরের দিন আবারো জমিতে এসে দেখি সব চারা পুড়ে লাল হয়ে গেছে। আমরা এই ক্ষতিপূরনের দাবি জানাচ্ছি। সাজেদা বেগম নামে এক কৃষাণী জানান,এই ফসল দিয়েই আমাদের পরিবার চলে। আমার ৫ কানি জমির চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমি কি করব বুঝতে পারছি না।ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আমি এই জমি চাষকরিছি যদি ক্ষতিপূরণ না পাই তাহলে পরিবারের লোকজন নিয়ে কি ভাবে চলবো আমি তা বুঝতে পারছি না। সাদেকুল ইসলাম সাচ্চু একজন মৎস্য খামারি জানান,এ্যামোনিয়া প্লান্ট থেকে গ্যাসে আমার পুকুরের দুই লক্ষাধীক টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি বিবেচনা করার দাবি জানাই। পাশাপাশি আমাদের ক্ষতিপূরনের দাবি জানাচ্ছি।
এই বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, সোমবার সকালে আমি এই বিষয়ে একটি অভিযোগ পাই। অভিযোগের গ্রেক্ষিতে ক্ষতির পরিমাণ জানতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের পর আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করব।